পরীক্ষার প্রথম থেকে অনঢ় অবস্থানে থাকলেও এবার সুর নরম করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
(ঢাবি)। ২৬ ডিসেম্বর থেকে নেয়া হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা। কিন্তু খোলা হবে
না হলগুলো। একাডেমিক কাউন্সিলের এমন সিদ্ধান্তের দু’দিন পর বিশ্ববিদ্যালয়টির ভিসি বললেন, শিক্ষার্থীদের
সাথে কথা বলে পরিস্থিতি বুঝে তার পর দেয়া হবে পরীক্ষার তারিখ। তবে পরীক্ষা হলেও আবাসিক
হল না খোলার ব্যাপারে অনঢ় তিনি।
এই পরীক্ষা যদি অনুষ্ঠিত হয় তবে এটা হবে করোনা মহামারির পর মূলধারার কোনো
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রথম সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ। মহামারির কারণে গত মার্চ থেকে বন্ধ
আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। জুন থেকে অনলাইনে ক্লাস চললেও এখন পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা হয়নি।
বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ২৬ ডিসেম্বর থেকে
স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষাগুলো নেয়া হবে। এ খবর স্থানীয় গণমাধ্যমে
প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে।
বিশেষ করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা যেসব শিক্ষার্থী আবাসিক হলে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়েন তাদের বক্তব্য, পরীক্ষা দেয়ার জন্য ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন তারা? কীভাবে অংশ
নেবেন পরীক্ষায়?
যে কারণে পরীক্ষা নিতে চায় বিশ্ববিদ্যালয় :
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নানা সময়ে পরীক্ষা
নেয়ার আবেদন এসেছে তাদের কাছে। কারণ তারা এখন চাকরির বাজারে পা রাখার জন্য উন্মুখ
হয়ে আছে। এ ছাড়া সেশন জট কমিয়ে আনাটাও একটা কারণ এই পরীক্ষা নেয়ার পিছনে।
এ কারণেই একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুর
তারিখ ঠিক করা হয়েছিলো এ বছরের ২৬ ডিসেম্বর। কিন্তু এখন সুর নরম করে ভিসি অধ্যাপক
মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, ‘পরীক্ষার কোনো ফাইনাল তারিখ দেয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের
বিভাগগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি বুঝে তারপর পরীক্ষার তারিখ ও
রুটিন দেয়া হবে।’
২৬ ডিসেম্বর তারিখটি ছিল ভিসির চোখে একটি প্রস্তুতিমূলক সময়সূচি। তবে হল
না খোলার ব্যাপারে অনঢ় অবস্থানের কথা জানিয়েছেন ভিসি।
তাহলে পরীক্ষা দিতে এসে কোথায় থাকবেন ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা?
ভিসি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, যেহেতু শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে আগ্রহী
তাই তারা নিজেদের থাকার একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করতে পারবে।
পরীক্ষা দিতে চান যারা :বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ
বর্ষের ছাত্রী সাদিয়া রহমান বলেন, ‘পরীক্ষা হয়ে গেলে অন্তত বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষাগুলোতে
অংশ নিতে পারবো। ওই কারণে যদি পরীক্ষা হয়, তাহলে ঢাকায় থাকার মতো একটা ব্যবস্থা করতে
হবে।’
যেভাবে নেয়া হতে পারে পরীক্ষা :
ভিসি বলছেন, সবার আগে করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টা
বিবেচনায় রাখতে হবে। ওই বিবেচনায় পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সময় অর্ধেক কমিয়ে আনা হবে।
ভাবা হচ্ছে, এক দিনে দুটি পরীক্ষা নেবার কথাও।
তিনি আরো জানান, ইনকোর্স ও টিউটোরিয়াল পরীক্ষা অনলাইনের মাধ্যমে নেয়া হবে।
ভিসির ভাষায়, ‘স্বল্প সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে হবে।’
সূত্র : বিবিসি