বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে গবেষণা, উদ্ভাবন ও নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা আন্তর্জাতিকমানের গবেষণার ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভালোমানের গবেষণা হোক, আমরা এ বিষয়ে ফান্ড (অর্থায়ন) দেবো। ইউজিসি এ বিষয়ে রিঅ্যাওয়ার্ড বা প্রণোদনাসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।
শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইউল্যাবের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ভারতের সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির যৌথ উদ্যোগে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সহযোগিতা করছে ইউজিসি ও সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ।
‘ইন্টারন্যাশনাল জয়েন্ট কনফারেন্স অন কম্পিউটেশনাল ইন্টিলিজেন্স-২০১৯ (আইজেসিসিআই)’ শীর্ষক এ আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তথ্যপ্রযুক্তিবিদ ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তা বাস্তবায়নও করছেন তিনি। তিনিও (প্রধানমন্ত্রী) চান দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণার জন্য অর্থায়ন করতে। ইউজিসিও সেভাবে কাজ করতে চায়। এক্ষেত্রে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে মানসম্মত এবং আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা চাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইমেজ সঙ্কট রয়েছে। আমরা এর উত্তরণ চাই। এজন্য ইউজিসি প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও নেবে।
ভবিষ্যত তথ্যপ্রযুক্তির কথা বলতে গিয়ে প্রফেসর ড. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, আসন্ন দিনে আমরা কয়েকটি মূল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবো। এটা অনুমান করা হয় যে, মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ৭০ শতাংশ কয়েক দশকের মধ্যে অটোমেটেড হতে পারে।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রস্তুতি ও বাংলাদেশের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং করণীয় প্রসঙ্গে এই প্রখ্যাত তথ্যপ্রযুক্তিবিদ বলেন, আমাদের যে ৮ কোটি যুবক রয়েছে। তারা আমাদের সম্পদ। তাদের প্রযুক্তিবান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যাতে তারা ওই বিপ্লবে দেশে-বিদেশে নেতৃত্ব দিতে পারে।
এ সময় ল্যাংগুয়েজ প্রসেসিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ব্লক চেইন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব এবং মেশিন লার্নিং অ্যাপ্লিকেশন প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, নলেজ ডিস্ট্রিবিউশন করতে না পারলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিপূর্ণ হয় না। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে পিএইচডি অফার করা হয় কম। আমার মনে হয়, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের সুযোগ আছে, তারা শিক্ষার্থীদের জন্য পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণের অফার করতে পারে।
এ সময় ইউল্যাবের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এইচ এম জহিরুল হক, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. চৌধুরী মফিজুর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. কায়কোবাদ, হংকং ব্লকচেইন সোসাইটির প্রেসিডেন্ট ড. লরেন্স মা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।